
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী হোসেইনি খামেনি বলেছেন, দেশের প্রয়োজনে পরমাণু ক্ষমতা অর্জনের বিষয়ে ইরান দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। প্রয়োজনে তার দেশ ৬০ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজ করবে।
২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে মতবিরোধের মধ্যেই সোমবার এ ঘোষণা দিলেন তিনি।
সোমবার সন্ধ্যায় ইরানের বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্যদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় খামেনি বলেন, ‘দেশের প্রয়োজনে পরমাণু সক্ষমতা অর্জনের বিষয়ে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ কারণে আমাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ২০ শতাংশে সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং যত মাত্রা প্রয়োজন হবে তত মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা হবে। উদাহরণস্বরূপ পামাণবিক প্রযুক্তি বা অন্য কোনো কাজে আমাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা শতকরা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত উন্নীত হতে পারে।’
খামেনি বলেন, এর অর্থ এই নয় যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চায়। ইসরায়েল এবং পশ্চিমা দেশগুলোও এটা জানে। কিন্তু ইরানের ওপর বলপ্রয়োগ করতে এটাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করতে চায় তারা।
তিনি বলেন, আমরা যদি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করার প্রয়োজন মনে করতাম, তাহলে ইসরায়েল বা পশ্চিমা কোনো দেশই আমাদেরকে আটকাতে পারতো না
ইরানের সর্বোচ্চ এই নেতা বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে পরমাণু অস্ত্র নিছক একটি অজুহাত। আমাদের কাছে সাধারণ মানের কোনো সমরাস্ত্র থাকুক তাও তারা চায় না। কারণ, তারা ইরানকে আত্মরক্ষার অধিকার দিতেই রাজি নয়।’
২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে বিশ্বের পাঁচ পরাশক্তির পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ত্রুটিপূর্ণ’, ‘একপেশে’, ‘এর কোনো ভবিষ্যৎ নেই’ অভিযোগ তুলে চুক্তি থেকে বেরিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার পর চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলার ব্যাপারে ইরানও উদাসীন হয়ে পড়ে।
এরপর তেহরানের ওপর আবারও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তবে চীন, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি সমঝোতায় টিকে থাকলেও চুক্তি মেনে চলার ক্ষেত্রে এসব দেশের ঢিলেঢালা মনোভাব ছিল লক্ষ্য করার মতো।
তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের দায়িত্ব নেওয়ার পর পরমাণু চুক্তিতে আবারও ফেরার ব্যাপারে আগ্রহী ওয়াশিংটন ও তেহরান। তবে চুক্তিতে কে আগে ফিরবে, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক মতবিরোধ চলছে।
তেহরান বলছে, ইরান পরমাণু চুক্তিতে ফিরতে চায়; তবে এর আগে দেশটির ওপর থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। ওয়াশিংটনের দাবি, ইরানকেই এই চুক্তিতে ফেরার বিষয়ে আগে ঘোষণা দিতে হবে।